বিশেষ প্রতিবেদক:
কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওয়েয়র আলোচিত ধর্ষণ মামলার আসামী ও ইয়াবা ব্যবসায়ী মো. ইউনুছ গোপনে সৌদিআরব পালানোর পথে রয়েছে। আজকালের মধ্যে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর হয়ে সে সৌদিআরব পালাচ্ছে বলে বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে। এতে করে আসামী ইউনুছের ধর্ষণের শিকার হয়ে গর্ভবতী হওয়া হাছিনা বেগম চরম অনিশ্চয়তায় রয়েছেন। তাই আসামী ইউনুছের সৌদিআরব পালিয়ে যাওয়া ঠেকাতে পুলিশ প্রশাসনের কাছে আকুতি জানিয়েছেন ধর্ষিতা গর্ভবতী হাসিনা বেগম।

ঘটনা সূত্র জানা গেছে, ঈদগাঁওয়ের দক্ষিণ মাইজপাড়া এলাকার মো. হোছনের মেে য় হাসিনা বেগমকে (১৮) বিয়ের প্রলোভন দিয়ে দু’দফা ধর্ষণ করেন একই এলাকার আক্তার হোছনের পুত্র মো. ইউনুছ। ধর্ষণের কারণে এক পর্যায়ে গর্ভবতী হয়ে পড়েন হাসিনা বেগম। কিন্তু পরবর্তীতে হাসিনাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায় ধর্ষক ইউনুছ। এই নিয়ে কয়েক দফা স্থানীয়ভাবে বিচার-সালিশও হয়েছে। তাতেও কাজ না হওয়ায় গত ৮ আগস্ট কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। যার সিপি নং-৯৭০। ভুক্তভোগী হাসিনার বড়বোন জাহেদা বেগম বাদি হয়ে মামলাটি করেন। আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ, পিবিআই কক্সবাজার’র উপ-পরিদর্শক (এসআই) শরীফ উল্লাহ তদন্তের দায়িত্ব পান। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ তদন্ত সম্পন্ন করেন। কিন্তু দীর্ঘ দু’মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়নি। আসামী পক্ষ মোটা অংকের টাকা নিয়েই তিনি তদন্ত প্রতিবেদন দেয়নি। এই তদন্ত কর্মকর্তার সাথে যোগসাজস করে আসামী ইউনুছ এরই মধ্যে সৌদিআরব পালানোর সব কার্যক্রম সম্পন্ন করে। এমনকি আজকালের মধ্যে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর হয়ে পালাচ্ছে বলে ভুক্তভোগী জানতে পেরেছেন। ইতিমধ্যে আজ শুক্রবার বাড়ি থেকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছে আসামী ইউনুছ।

ভুক্তভোগী হাসিনা আরো অভিযোগ করেন, তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক শরীফ উল্লাহ এক সময় ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে নিযুক্ত ছিলেন। সে সুবাধে এখনো তার পরিবার সেখানে থাকে। এই সুযোগকে স্থানীয় মেম্বার নূরুল হক আসামী ইউনুছের পক্ষ থেকে তদন্ত কর্মকর্তা শরীফ উল্লাহর সাথে মাটা টাকায় সব ধরণের দফারফা করেন। এই জন্য মেম্বার নূরুল হকও মোটা টাকা খেয়েছেন।

ভুক্তভোগী হাসিনা আরো অভিযোগ করেন, আসামী মো. ইউনুছ একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী। সে মুদি দোকানের আড়ালে ইয়াবা ব্যবসা করে বিপুল টাকার মালিক হয়েছে। এই টাকা দিয়েই সবার মুখ বন্ধ করে মামলা থেকে বাঁচতে সে গোপনে সৌদিআরব পালানোর চেষ্টা করছে।

এদিকে ধর্ষণে গর্ভবতী হওয়া হাসিনা বেগম গর্ভের সন্তান নিয়ে চরম দু:চিন্তায় পড়ে গেছেন। তার ও অনাগত সন্তানের ভবিষ্যৎ চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। এই নিয়ে হাসিনা বেগম চরম কষ্টে আছেন। তাই তিনি আসামীকে ধর্ষক ইউনুছের সৌদিআরব পালানোর ঠেকাতে পুলিশের কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হলে মুঠোফোন বন্ধ থাকায় কক্সবাজার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।